তিন বছরের বেশি সময় ধরে শিক্ষক নিবন্ধন সনদ পাওয়ার পরও ১৬ তম তারা চাকরির জন্য আবেদন করতে পারেননি।
সম্প্রতি চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির দাবিতে সারাদেশের জেলা প্রশাসক ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে জমা দেওয়া স্মারকলিপিতে প্রার্থীরা এ মন্তব্য করেন।
‘১৬ তম শিক্ষক নিবন্ধনের সনদ ’
স্মারকলিপিতে প্রার্থীরা বলেছেন যে প্রিলিম থেকে শুরু করে ভাইভা সম্পূর্ণ করতে 3 বছরেরও বেশি সময় লেগেছে। এ কারণে প্রতিদিনই কারো না কারো কাজের বয়স ছাড়িয়ে যাচ্ছে। চাকরির জন্য আবেদন করতে ব্যর্থ হওয়ার পরে NTRCA কর্তৃক ইস্যু করা 16তম শিক্ষক নিবন্ধন শংসাপত্র সাদা কাগজের চেয়েও মূল্যবান হয়ে উঠছে। যত দিন যাচ্ছে আমরা ততই অসহায় হয়ে যাচ্ছি।
তারা বলেন, আমরা দ্রুত চতুর্থ জন ঘোষণার দাবিতে ৮ ফেব্রুয়ারি অনশনে নেমেছিলাম। এর পরিপ্রেক্ষিতে এনটিআরসিএর তৎকালীন চেয়ারম্যান এপ্রিল মাসে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি জারির মৌখিক প্রতিশ্রুতি দেন। তাই চতুর্থ জন ঘোষণা প্রত্যাশী ফোরাম অনশন প্রত্যাহার করে। তবে বর্তমান চেয়ারম্যানের আশ্বাস বাস্তবায়িত হয়নি।
17 বছর বয়স থেকে 3 বছর পার হয়ে গেছে, অনেকের বয়স এখন 35 বছরের বেশি। আবার অনেকের ৩৫ বছর হতে আর কয়েকদিন বাকি। যতই দিন যাচ্ছে যোগ্য শিক্ষকরা আবেদনের সুযোগ হারাচ্ছেন। 17 তম ব্যাচের মতো অন্য কোনো ব্যাচকে এনটিআরসিএ দ্বারা দীর্ঘ 3 বছর নষ্ট করতে হয়নি। প্রিলিম, লিখিত ও ভাইভার ফলাফল যথাসময়ে প্রকাশিত হলে, নিয়াগ বিজ্ঞপ্তির জন্য আমাদের আরও দুই বছর বাকি থাকত। সেক্ষেত্রে সরকারি ঘোষণা একটু দেরিতে হলেও বয়সের কারণে শিক্ষকরা যেতে দ্বিধা করেন না। চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি না হলে আমাদের শিক্ষক হওয়ার স্বপ্ন চিরকাল স্বপ্নই থেকে যাবে। এমতাবস্থায় আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি রক্ষায় স্বল্প সময়ে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশের বিকল্প নেই।
যাইহোক, 23 মে, 2019 তারিখে 16 তম শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হয়েছিল। প্রিলিমিনারি পরীক্ষা একই বছরের 30 আগস্ট অনুষ্ঠিত হয়েছিল। একই বছর লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। দীর্ঘ এক বছর পর, ভাইবা পরীক্ষা 2 ডিসেম্বর, 2020 এ শুরু হয়। 16 তম নিবন্ধনের চূড়ান্ত ফলাফল 16 অক্টোবর 2021 এ প্রকাশিত হয়েছিল।
নিবন্ধিত প্রার্থীদের ভাষ্যমতে, দীর্ঘ বিলম্বের পর ১৬ তারিখ তৃতীয় গণবিজ্ঞপ্তির সুযোগ হারায়। এনটিআরসিএ’র সাবেক চেয়ারম্যান এবং সচিব ১৬তম দের ক্ষতি বিবেচনায় মুজিব শতবর্ষে চতুর্থ গণবিজ্ঞপ্তির প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। । তবে সেই আশ্বাস বাস্তবায়িত হয়নি।
আইসিটি বিষয়ের শিক্ষকদের রিট
এদিকে – আইসিটি বিষয়ের শিক্ষকদের ৬ মাসের সনদ নিয়ে করা রিট আবেদনের শুনানির জন্য গঠিত আপিল বিভাগের বিচারপতিদের বেঞ্চ ভেঙে যাওয়ায় শুনানি হয়নি। নতুন বেঞ্চ গঠনের পর বিচারকরা শুনানির তারিখ ঠিক করবেন।
বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) চেয়ারম্যান এনামুল কাদের খান রোববার (১০ এপ্রিল) দৈনিক ক্যাম্পাসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ মন্তব্য করেন।
এনটিআরসিএ চেয়ারম্যান বলেন, আইসিটি শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে নানা জটিলতা রয়েছে। আমরা পরীক্ষার্থীদের সব কাগজপত্র নিয়েছি। সংশ্লিষ্ট শাখার লোকজন দিয়ে সেগুলো পরীক্ষা করা হচ্ছে। যাইহোক, এটা সময়ের ব্যাপার। এই রিট নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তির ফলাফল প্রকাশ করা সম্ভব হবে না।
জানা গেছে, বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১৫ হাজারের বেশি শিক্ষক নিয়োগের জন্য বিশেষ গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছে এনটিআরসিএ। আবেদন গত ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হয়ে ২২ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলে। এতে আবেদন করেন ৩ লাখ ৪৩ হাজার ৪০৮ জন।
এই গণবিজ্ঞপ্তিতে ৬ মাসের আইসিটি সার্টিফিকেটধারী এবং ইতিমধ্যে এমপিওভুক্ত শিক্ষকরা নতুন নিয়োগের জন্য আবেদন করছেন। তবে ২০১৭ সালের এমপিও নীতিমালায় ৬ মাসের সনদধারীদের নিয়োগ বন্ধ করে দেওয়া হয়। যা এমপিও নীতি-2021-এও বহাল রাখা হয়েছে। এরপরও নিয়োগ পেতে ৬ মাসের সনদধারীরা রিট আবেদন করেছেন। ফলে চাকরির অপেক্ষায় থাকা প্রার্থীরা চাকরি থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন।